কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও বিচার হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যারা সহিংসতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ ও সাধারণ মানুষ কোনো হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে পারেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল শুক্রবার দুপুরে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডিতে দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি এসব কথা বলেন। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির পেক্ষাপটে ছয় দিন নীরব থাকার পর এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। আমরা বরাবরই শিক্ষার্থীদের দাবি সমর্থন করে আসছি। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী এমন হত্যাকাণ্ড চালাতে পারে না। কোনো অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু সমর্থন করি না। প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি চক্র যে আক্রমণ চালিয়েছে তা কোনো সভ্য জাতি মেনে নিতে পারে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আমরা বরাবরই শিক্ষার্থীদের দাবি সমর্থন করে আসছি। তিনি বলেন, একাত্তরে যারা বিশ্বাসঘাতকতা ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তারা এখনো বিশ্বাসঘাতক। ১৯৭৫-এ যারা জাতির পিতা, বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তারা এখনো বিশ্বাসঘাতক, ২১ আগস্টে শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। ১৯৭১, ৭৫, ২১ আগস্ট, ২০১৩, ১৪, ১৫ ও ২৪-এর বিশ্বাসঘাতক ও খুনিরা হচ্ছে বিএনপি জামায়াত। তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের হত্যা করে সরকারের ওপর দায় চাপানো হয়েছে। আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। নজিরবিহীন তাণ্ডব চালিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় নিরীহ মানুষকে হত্যার দায় বিএনপি-জামায়াতের। পুলিশ ও সাধারণ মানুষ কোনো হত্যায় অংশ নিতে পারেন না বলেও মন্তব্য করে তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা মৃত্যুর তালিকা...পত্র-পত্রিকায় দুই শ’র মতো বা দুই শ’র চেয়ে একটু বেশি। আমরা এটার খোঁজ-খবর নিচ্ছি। অনেক জায়গায়...জাহাঙ্গীরের (গাজীপুরের সাবেক মেয়র) সঙ্গে জুয়েল নামের একটি ছেলে সব সময় থাকতো, তাকে উত্তরায় মেরে লাশ লটকিয়ে রাখা হয়। কী বর্বর! নৃশংসতা। পুলিশকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেক নিরীহ মানুষ মারা গেছেন। জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্যপট দেখতে ছিল...বাচ্চা যখন তাকালো, সেই বাচ্চা গুলি খেয়ে মারা গেল। তারপরে এ ধরনের ঘটনা আরও অনেক ঘটেছে। রাস্তায় বেরিয়েছে, নিষ্পাপ, নির্বোধ শিশু, কিছুক্ষণ পর দেখা গেল সেও লাশ হয়ে পড়েছিল। এ রকম ঘটনা অনেক আছে। এগুলো জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব। আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সাংবাদিকেরাও নিচ্ছেন। সব সত্য বেরিয়ে আসবে। আপনি বলেছেন অনেকেই রাস্তায় বের হয়ে, জানালা দিয়ে দেখার সময় গুলি খেয়ে মারা গেছে। এগুলোর বেশিরভাগই গানশটে মারা গেছে। তাহলে আপনি কি বলেছেন জামায়াত-শিবিরের হাতে অস্ত্র ছিল। সেটা কি উদ্ধার করেছেন। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, জামায়াত-শিবিরের হাতে অস্ত্র ছিল। কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এখনো চলছে (উদ্ধার অভিযান)। উদ্ধার হবেই। তাদের নির্দেশদাতা ও হোতারা কিন্তু গ্রেফতার হয়েছে। রিমান্ডে আছে। অনেক সত্য বেরিয়ে আসবে। তিনি বলেন, আমরা তো রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করছি। প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলা করছি। আপনাদেরও আমরা সহযোগিতা চাই। এ অপশক্তি সবারই শত্রু। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলব। বিএনপি-জামায়াত-উগ্র বামপন্থী-জঙ্গিগোষ্ঠী কুচক্রী মহল এখনো সক্রিয় আছে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তাদের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে প্রস্তুত হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে। তারা আবারও বিভিন্নভাবে হামলা চালাতে পারে। দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান, যেখানে অস্ত্রধারী ক্যাডারদের খোঁজ পাবেন, তাঁদের তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে সহযোগিতা করবেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-শিবির, জঙ্গিগোষ্ঠীর সন্ত্রাসীরা আর যাতে সহিংসতা ছড়াতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। নেতাকর্মীদের কারফিউ মেনে চলার অনুরোধ করেন কাদের। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
আমরা বরাবরই শিক্ষার্থীদের দাবি সমর্থন করে আসছি : ওবায়দুল কাদের
- আপলোড সময় : ২৭-০৭-২০২৪ ১২:৩২:০৩ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৭-০৭-২০২৪ ১২:৩২:০৩ অপরাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ